আচ্ছা মা আপু সেই কবে তার শশুড় বাড়ি গেসে প্রায় দুমাস হয়ে গেলো একটা ফোন ও দিলোনা কেন আমাকে?
” বিয়ে দিয়ে দিছি সংসার করতেছে তুই কি ওর আপন ভাই নাকি না আমরা ওর আপন মা? আপদ বিদায় দিয়ে দিসি ফোন দেয়ার কি দরকার”
মায়ের এমন দ্বারা কথা হালকা মুচকি হেসে দিলো রাফায়েত। আর প্রতিউত্তরে মা কে বললো
মা আমার আর আপুর বাবা টা কে?
রাফায়েতের আম্মু অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করলো সেকিরে হতচ্ছাড়া নিজের বাপের নাম টাও ভুলে গেলি। কি ছেলেরে বাপু।
না মা বাবার নাম টা ভুলিনি শুধু এটাই মনে করিয়ে দিলাম আরকি আমার আর আপুর বাবা এক সে আমার আপন বোন তুমি তাকে তার মেয়ে মানো আর না মানো।
সেদিনের পর চলে গেল আরো এক মাস। রাফায়েত বাসার কারোর সাথে তেমন একটা কথা বলেনাহ। সারাদিন বাইরে বাইরে থাকে।
হুট করেই একদিন সন্ধ্যা বেলা নিধি বাসায় আসলো। রাফায়েত সেদিন বাইরে ছিলো, পাড়ার লোকেদের মুখে শুনেছে তার বোন বাসায় এসেছে খুশি মনে সে এক প্রকার দৌড়ে বাসায় এসেছে বোন কে একনজর দেখার জন্য।
বাসার দরজায় আসার পর বোনের আহত কণ্ঠ শুনার পর যেন এক প্রকার থমকে গেলো ঠিক পিছন থেকে আপু বলে ডাক দেয়ার পর যখন নিধির চেহারার অবস্থা দেখলো রাফায়েত কান্নায় ভেঙে পড়লো। একি অবস্থা তার বোনের, কান্নামাখা কন্ঠে জিজ্ঞেস করল কেমন আছিস রে?
” ভাই আমি ভালো আছি তুই কেমন আছিস ”
কেমন ভালো আছিস দেখতেই পাচ্ছি। চেহারার এই অবস্থা কেন? জানোয়ার টা তোর সাথে কি করেছে?
আহত কণ্ঠে নিধি বলল ভাই আমাকে বাঁচা আমি আর পারিনা খুব কষ্ট দেয় লোকটা।
বোনের এমন অবস্থা চিৎকার করে বাবা মাকে ডাকল সে।
তারা আসার পর সে তার মায়ের কাছে প্রশ্ন করল আমার বোন বাড়িতে এসেছে অনেক্ষণ হয়েছে এখন ও সে কেন এখানে দাড়িয়ে? আমার দ্বিতীয় প্রশ্ন আমার বোনের এই অবস্থার জন্য যে তোমরা দায়ী তা কি তোমরা স্বীকার করবে?
রাফায়েত এর কড়া গলার কন্ঠ শুনে তার মা বাবা এক প্রকার কেঁপে উঠলো মুখ দিয়ে কোন কথা বেরুচ্ছেনা। রাফায়েত আবার বলা শুরু করলো
” মা আমার জানা মতে বাবা তোমাকে একদিন একটা থাপ্পড় দিয়েছিলো আর তুমি বাসা ছেড়ে নানু বাড়ি চলে গিয়েছিয়ে যদিও দোষটা তোমার ছিলো তাও সে তুমি একটা মেয়ে হয়ে কিভাবে আরেকটা মেয়ে কে একটা নরপশুর কাছে তুলে দিয়েছিলে? আমার বোন কে নিজের মেয়ে মানোনা ঠিক আছে কিন্তু একজন নারী হয়ে অন্য নারী কে কি সম্মান করতে শিখো নাই? নিজেকে তোমার ছেলে দাবী করতেও আমার বিবেকে বাধছে। টাকাই কি সব কিছু?
তোমাদের সাথে আমাদের সম্পর্ক এখানেই শেষ।
রাফায়েত এর শেষ কথা গুলোয় তার মায়ের টনক নেড়ে উঠলো আসলেই সে কি করেছে তার উপলব্ধি সে এখন করছে আর তার বাবা রুমের এক কোণে দাড়িয়ে চোখের জ্বল ফেলছে। তিনি অনেক চেষ্টা করেছিলো বিয়ে টা আটকানোর জন্য কিন্তু পারেনি।
রাফায়েত তার বোনের হাত ধরে বাড়ি থেকে বের হয়ে গেল। একবারো পিছন ফিরে তাকানোর প্রয়োজন মনে করলো নাহ।
রাস্তায় আসার পর নিধি মুখ খুললো এতক্ষণ সে যেন একপ্রকার নিস্তব্ধ ছিলো।
নিধিঃ ভাই আমরা কোথায় যাবো? ফিরে চল না আমি শশুড় বাড়ি চলে যাই আমার জন্য কেন শুধু শুধু কষ্ট করবি
খুব শান্ত কণ্ঠে উত্তর দিলো আমাকে কি নিজের ভাই মানিস? আমাকে কি বিশ্বাস করিস?
নিধিঃ তোকে আমি আমার থেকে ও বেশি বিশ্বাস করি আর তুই তো আমার ই ভাই ভাই মানবোনা কেন?
যদি বিশ্বাস থাকে তাহলে চুপটি করে চলতে থাক আর কোন কথা না।
হারিয়ে গেল তারা দুই ভাই বোন সবার চক্ষুর আড়ালে।